সাধারণত টিনেজের সময়টায় সবচেয়ে বেশি একনে বা ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন, যাদের এই বয়স পার হয়ে যাওয়ার পরেও ব্রণের সমস্যা থেকেই যায়। এমন কি আমরা অনেকেই সারা বছরই এই ব্রণের সমস্যায় ভুগে থাকি। ব্রণ মুক্ত ত্বক পাওয়ার জন্যে নিয়মিত নানা উপায়ে ত্বকের পরিচর্চা করার পরও স্কিনের অবস্থা যেন তেমনই রয়ে যায়! ডে স্কিনকেয়ার রুটিন এবং নাইট স্কিনকেয়ার রুটিন মাফিক মুখ পরিষ্কার করলেও যখন কোন উপকার হয় না, এমন অবস্থায় কখনও কি আমরা ভেবে দেখেছি কেন এমনটা হচ্ছে?
আপনার চুলই আপনার মুখের ব্রণের কারণ হতে পারে। শুনতে আশ্চর্যজনক মনে হলেও, অনেক সময়ই আমাদের চুল কপালে বা মুখের উপর এসে পরে। তখন চুলে লেগে থাকা খুশকি, তেল বা ময়লাও মুখে লেগে যায়, যা হতে পারে ব্রণের অন্যতম কারণ। তাই যদি মুখে ব্রণের সমস্যা থাকে বা হঠাৎ স্কিনে কোন প্রবলেম দেখা দেয় একটু খেয়াল করে দেখুন তা আপনার চুলের জন্যে হচ্ছে কি না! আর এমনটি যদি হয় তাহলে খুব সাধারণ এবং ছোট ছোট কিছু ব্যাপার একটু খেয়াল করেই কিন্তু আমরা খুব সহজেই পরিত্রাণ পেতে পারি এই সমস্যা থেকে। কিভাবে? চলুন তাহলে জেনে নেই এই বিষয়ে।
আপনার চুলই আপনার মুখের ব্রণের কারণ হলে সেটা থেকে নিস্তারের উপায়
১) চুল খুশকিমুক্ত রাখুন
খুশকি আমাদের জন্যে একটি সাধারন এবং খুবই যন্ত্রণাদায়ক একটি সমস্যার নাম। শীত, গ্রীষ্ম কী বর্ষা সব ঋতুতেই ভিন্ন ভিন্ন কারণে খুশকি দেখা যায়। খুশকি আমাদের চুলের ও মাথার ত্বকের বিবিধ রকমের ক্ষতি করে। মাথায় খুশকি থাকা মানে কিন্তু খুব সহজেই আমাদের মুখের উপরেও তা ঝরে পড়তে পারে। মুখের ঘাম, তেল আর খুশকি সব মিলে ব্রণ হওয়াটা খুব স্বাভাবিক! তাই সবার আগে চেষ্টা করতে হবে যথাসম্ভব খুশকি কমানোর। ভ্রুতেও অনেক সময় খুশকি থাকতে পারে। সেটাও পরিষ্কার রাখতে হবে।
২) হেয়ার কাটের দিকে নজর দিন
খেয়াল করে দেখুন আপনার চুলে যে হেয়ার কাট দেয়া আছে তা আপনার মুখের উপর বা কপালে এসে পরছে কি না। কপালে চুল পরে থাকলে কপাল যেমন ঘেমে যায় পাশাপাশি চুলের ময়লাও খুব সহজেই আপনার স্কিনে লেগে যেতে পারে যা হতে পারে ব্রণের অন্যতম কারণ। কাজেই সবসময় যে কোন হেয়ার কাট দেয়ার সময় খেয়াল রাখুন যেন চুল আপনার কপালের উপরে না পরে থাকে। চুল যদি ছোট হয় তবে চেষ্টা করুন তা বেঁধে রাখতে।
৩) শরীরে ঘাম হলে দ্রুত পরিষ্কার করুন
গরমের দিন আপনার কেন অপছন্দ? – এই প্রশ্নটি করলেই কোন চিন্তা ভাবনা ছাড়া যে কেউ কারণ হিসেবে প্রচণ্ড ঘামানোর কথা বলে থাকবেন। আপনি কি জানেন? আমাদের হেয়ারলাইন বরাবর প্রতিদিন যে পরিমাণ ঘাম জমে থাকে তা থেকে কিন্তু খুব সহজেই বাড়তে পারে ব্রণের উপদ্রব। তাই বাইরে বের হলে বা শারীরিক পরিশ্রম করার পর যত দ্রুত সম্ভব সাবান এবং শ্যাম্পু ব্যবহার করে গোসল করে নিন। তাতে যেমন লোমকুপে ময়লা জমে থাকবে না, তেমনি মুখের ব্রণও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
৪) অনেক বেশি হেয়ার স্টাইলিং প্রোডাক্ট ইউজ করা থেকে বিরত থাকুন
চুলে আমরা যে সকল প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকি তার কমবেশি সবগুলোই তেলতেলে ধরনের। এই প্রোডাক্ট গুলো খুব সহজেই চুল থেকে আমাদের স্কিনে বা মুখে লেগে যেতে পারে। যা খুব সহজেই বন্ধ করে দিতে পারে আমাদের মুখের রোমছিদ্রগুলোকে। হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্টস ব্যবহার করার সময় অবশ্যই আমাদের যথাসম্ভব সতর্কতা মেনে ব্যবহার করতে হবে যেন ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা এড়ানো যায়।
৫) অপ্রয়োজনে চুলে হিট ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন
চুলে ঘন ঘন হিট ব্যবহার করলে তা আমাদের মাথার স্ক্যাল্প শুকনো বা রুক্ষ করে দেয় যা আমাদের স্ক্যাল্পকে আরও বেশি করে সেবাম উৎপাদন করতে উদ্বুদ্ধ করে। ব্লো ড্রাই করার ফলে তা আমাদের চুলকে সুন্দর দেখাতে সাহায্য করে ঠিকই তবে প্রতিনিয়ত এটি করার ফলে তা আমাদের স্কিনের ব্রণের কারণও হতে পারে। তাই অবশ্যই এই ছোটখাটো ব্যাপারগুলো আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।
স্কিনকেয়ার রুটিন পারফেক্টলি মেনে চললেও আমরা অনেকেই এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানি না। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে সাধারণ কিছু নিয়ম মেনে চললেই কিন্তু আমরা খুব সহজেই পরিত্রাণ পেতে পারি এই সমস্যা থেকে। আপনার চুলই আপনার মুখের ব্রণের কারণ যেন না হয়, সেটা খেয়াল রাখবেন। তবে যাদের অনেক অনেক বেশী ব্রণের প্রকোপ দেখা যায়, তাদের ক্ষেত্রে ডার্মাটোলজিস্ট-এর সাথে যোগাযোগ করা ভালো। কারন হরমোনাল ব্যালান্স ঠিক না থাকলে একনে হতে পারে। সেই সাথে তেলতেলে খাবার এড়িয়ে চলতে হবে, পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে এবং ঠিকমত ঘুমাতে হবে।
ছবি- ইমেজেসবাজার
The post আপনার চুলই আপনার মুখের ব্রণের কারণ নয় তো? appeared first on Shajgoj.