এক্সফলিয়েশন! এ শব্দটি খুবই পরিচিত এবং আমাদের স্কিন কেয়ার রুটিনের খুবই অ্যাসেনশিয়াল একটি স্টেপ। কিন্তু স্কিনের জন্য এক্সফলিয়েশন আসলে কতটুকু জরুরি বা স্কিনে এটি কিভাবে কাজ করে আমরা অনেকেই হয়তো পরিষ্কারভাবে বলতে পারব না। আবার অনেকেই মনে করে থাকে দানাদার যেকোনো প্রোডাক্ট দিয়ে ফেইস ক্লিন করাই বুঝি এক্সফলিয়েশন। কিন্তু স্কিন টাইপ ও স্কিন প্রব্লেম অনুযায়ী যে এক্সফলিয়েট ডিফরেন্ট হয়ে থাকে তাও কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না। এই সকল না জানা তথ্য ও কনফ্যুশন দূর করতেই আজকের এই লেখা। যেখানে আমরা এক্সফলিয়েশন সম্পর্কে একটা বিস্তারিত ধারণা পাব।
ত্বকে এক্সফলিয়েটর কিভাবে কাজ করে?
আমরা হয়তো অনেকেই জানি না আমাদের যে স্কিন সেলস তার প্রত্যেকটারই একটা বয়সসীমা আছে। অর্থাৎ একটা নির্দিষ্ট সময় পর এই সেলগুলো ডেড সেলে পরিণত হয়। এই ডেড সেল যদি সময়মতো রিমুভ না করা হয় তাহলে স্কিন ডার্ক হয়ে যায়, পোরস ক্লগ হয়ে যায়, স্কিন অনেক ড্রাই ও প্যাচি হয়ে যায়। এই ডেড সেল স্কিন সারফেসে জমে গেলে স্কিনে ফাইনলাইন, রিংকেলও ক্রিয়েট হয়। তাই অবশ্যই স্কিনের ডেড সেল নির্দিষ্ট সময় পর পর রিমুভ করতে হয়। আর এই ডেড সেল রিমুভ করাই আসলে এক্সফলিয়েটরের কাজ।
এক্সফলিয়েশনের কিছু উপকারিতা
ব্লেমিশ স্কিনে এক্সফলিয়েশন
স্কিনের ব্লেমিশনেস মানে হলো স্কিনে থাকা স্পেসিফিক কালচে দাগ, স্কিন ডিসকালার হয়ে যাওয়া অথবা স্কিনের কোন ফ্লস। এ ধরনের দাগ মূলত ডেড সেল থেকে তৈরি হয়। তাই এসকল দাগযুক্ত ত্বকে সপ্তাহে দুইবার এক্সফলিয়েট করা জরুরি।
ব্রনের দাগ দূর করতে এক্সফলিয়েশন
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্কিন থেকে ব্রন চলে গেলেও ব্রনের দাগ কিন্তু থেকেই যায়। এই দাগ হালকা কমাতে অবশ্যই এক্সফলিয়েট করতে হবে।
পোরস ক্লগ হলে এক্সফলিয়েশন
স্কিনে পোরস ক্লগ হয়ে গেলে ব্লাকহেডস, হোয়াইটহেডস দেখা দেয়। এক্সফলিয়েশন এই ব্লাকহেডস, হোয়াইটহেডস ক্লিন করতে অনেক বেশি হেল্প করে।
সানট্যান দূর করতে এক্সফলিয়েশন
স্কিনের উপরিভাগে সূর্যের তাপে একটা কালোভাব দেখা দেয়। যেহেতু এক্সফলিয়েশন স্কিনের উপরের ডেড সেল রিমুভ করে, তখন সাথে সাথে সানট্যানও চলে যায়।
ফিজিক্যাল এবং কেমিক্যাল এক্সফলিয়েটর
এক্সফলিয়েটর প্রধানত দুই টাইপের হয়ে থাকে। ফিজিক্যাল এক্সফলিয়েটর এবং কেমিক্যাল এক্সফলিয়েটর। কেমিক্যাল এক্সফলিয়েশনে ফলের এনজাইম বা গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের মতো অ্যাসিড ব্যবহার করা হয়, যা চিনি থেকে পাওয়া যায় এবং ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরি হয় মিল্ক থেকে। ফিজিক্যাল এক্সফলিয়েটরের খুব কমন একটা ফর্ম হলো ফেসিয়াল স্ক্রাব। এই স্ক্রাব নরমালি ছোট ছোট দানা থাকে, যা দিয়ে যখন আমরা ফেইস ম্যাসাজ করি, আমাদের ডেড সেল রিমুভ হয়ে যায়। আরেকটি বেশ স্ট্রং একটা ফিজিক্যাল এক্সফোলিয়েটর হলো মাইক্রোডার্মাব্রেশন কারণ এটা ত্বকের উপরের লেয়ার থেকে ডেড সেলের পরত তুলে ফেলে।
কেমিক্যাল এক্সফলিয়েশন কেমিক্যাল উপাদান থাকায় এক্সফলিয়েশনের পাশাপাশি স্কিনে আরও উপকার হয়, যেমন ব্রন বা পিগমেনটেশনে ত্বকের ভেতর থেকে রিপেয়ার করতে হেল্প করে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায় স্যালিসাইলিক অ্যাসিড (Salicylic acid) হলো এক প্রকার বি-এইচ-এ বা বিটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড। এটা পোরের গভীরে গিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে, ত্বকের সেবাম ক্ষরণকে নিয়ন্ত্রণ করে। যে কারণগুলোর জন্য ব্রন দেখা দিচ্ছে, সে সমস্যাগুলোই আর থাকবে না। এক্সফলিয়েশন আর স্কিন প্রবলেমের সল্যুশন এক সাথেই কিন্তু হয়ে গেল। কিন্তু ইনস্ট্যান্ট রেজাল্ট পাবেন না স্ক্রাবিং এর মতো।
কোন এক্সফলিয়েটর ব্যবহার করব?
এক্সফলিয়েটর কোনটা ব্যবহার করবো তা নির্ভর করে আমাদের ত্বকের উপর। যাদের স্কিন বেশি রাফ, অনেক দিন হলো ডেড সেল জমা পড়ে আছে তাদের জন্য ফিজিক্যাল এক্সফলিয়েটর ভালো হবে। কিন্তু ফিজিক্যাল এক্সফলিয়েশন যেহেতু একটু স্ট্রং তাই অনেক সময় একটু সেনসিটিভ স্কিন, অ্যাকনে প্রন স্কিনে এই এক্সফলিয়েটর অনেক বেশি হার্শ হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে কেমিক্যাল এক্সফলিয়েশন সব থেকে ভালো অপশন। কেমিক্যাল এক্সফলিয়েশন সব ধরনের স্কিনের জন্য উপযোগী।
এরকম একটি কেমিক্যাল এক্সফলিয়েটর হলো পিলিং জেল। পিলিং জেল স্কিনকে স্মুদ করে এবং স্কিনকে উজ্জ্বল করে। এতে থাকে আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড (AHA) ও বিটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড (BHA), যা প্রাকৃতিক ফলের এনজাইম থাকে। এই আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড (AHA) ও বিটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড (BHA) অ্যাকনে, ব্লাকহেডস, হোয়াইটহেডস দূর করতে খুবই উপকারী। এমনই একটি প্রোডাক্টের নাম হলো ফ্রেয়িয়াস উইকলি পিলিং ফেইসওয়াশ (freyia’s weekly peeling facewash)।
এক্সফলিয়েটর হিসেবে কিভাবে কাজ করে ফ্রেয়িয়াস উইকলি পিলিং ফেইসওয়াশ (freyia’s weekly peeling facewash)?
এই উইকলি পিলিং ফেইসওয়াশের প্রধান ইনগ্রেডিয়েন্ট হলো প্রোপিলিন গ্লাইকল (propylene glycol), যা স্কিনকে হাইড্রেট করে এবং স্কিনকে পেনেট্রেট করে। এতে আছে আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড (AHA) ও বিটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড (BHA), যা পিম্পলের ব্যাক্টেরিয়া থেকে স্কিনকে সুরক্ষা দেয়। স্কিনের ফাইনলাইন ও রিংকেল কমিয়ে আনে। স্কিনের ডেড সেল দূর করে। এতে আছে যষ্টি মধু, যা স্কিনে রোদে পোড়া দাগসহ অন্যান্য দাগ দূর করতে সাহায্য করে। ফ্রেয়িয়াস উইকলি পিলিং ফেইসওয়াশ (freyia’s weekly peeling facewash) দুই ধরনের পাওয়া যায়। একটি হলো অ্যালোভেরা সমৃদ্ধ ও আরেকটি মিল্ক বেইজড। যাদের স্কিন অয়েলি ও নরমাল তাদের জন্য অ্যালোভেরাটি বেশি ভালো হবে। আবার অনেকের স্কিন একটু সেনসিটিভ থাকে বা স্কিনে অ্যালার্জি থাকে। তাদের জন্য মিল্ক বেইজডটি বেশি উপযোগী। এই পিলিং ফেইসওয়াশ সপ্তাহে ১ থেকে ২ বার ব্যবহার করা যাবে। ৪ থেকে ৫ সপ্তাহ ব্যবহারের পর ত্বকের পরিবর্তন লক্ষণীয় হবে। এটি স্কিনকে সফট রাখবে। এটি ব্যবহারে আপনার অন্যান্য স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট আরও ভালো কাজ করবে। বেসিক্যালি freyia’s weekly peeling facewash empowers your other skin care products.
কিভাবে ব্যবহার করবো ফ্রেয়িয়াস উইকলি পিলিং ফেইসওয়াশ (freyia’s weekly peeling facewash)?
স্টেপ-১: স্কিন পানি দিয়ে ধুয়ে নিন এবং ভালোমতো শুকিয়ে নিন।
স্টেপ-২: হাতের তালুতে পরিমাণ মতো জেল নিয়ে স্কিনে আলতোভাবে ম্যাসাজ করুন।
স্টেপ-৩: যখন স্কিন থেকে ময়লা এবং ডেড সেলগুলো বের হয়ে আসবে, তখন পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
স্টেপ-৪: অবশ্যই একটা ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
এই ছিল এক্সফলিয়েশন নিয়ে সমস্ত আলোচনা। আশা করছি আপনাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো পৌঁছে দিতে পেরেছি। অনেকেই ভাবছেন ভালোমানের এক্সফলিয়েটর কোথায় পাবেন। আপনি চাইলে অনলাইনে অথেনটিক স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে। তাছাড়া, সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপে নিজে গিয়েও কিনতে পারেন, যা যমুনা ফিউচার পার্ক ও সীমান্ত স্কয়ারে অবস্থিত। বিভিন্ন ধরনের স্ক্রাব, কেমিক্যাল এক্সফলিয়েটর আছে তাদের কালেকশনে। আপনি ইনগ্রিডিয়েন্টস দেখে ত্বকের টাইপ অনুযায়ী বেছে নিতে পারবেন। ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
ছবি- সাজগোজ
The post এক্সফলিয়েশন | ত্বকের যত্নে এর গুরুত্ব কতটুকু? appeared first on Shajgoj.