Quantcast
Channel: Shajgoj
Viewing all articles
Browse latest Browse all 3010

ব্যস্ততা ও যান্ত্রিক জীবনে আনুন একটু সুখের পরশ

$
0
0

আমরা সকলেই চাই ভালো থাকতে, সুস্থ থাকতে। সবাই মনে মনে চায় আরও বেটার ফিল করতে। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে, বাড়ছে প্রযুক্তি, বাড়ছে ব্যস্ততা। প্রযুক্তি আমাদের কাজকে সহজ করে দিচ্ছে ঠিকই, কিন্তু আমাদেরকে ক্রমেই দূরে ঠেলে দিচ্ছে প্রকৃতির কাছ থেকে। যান্ত্রিক জীবনে আমাদের ব্যস্ততা এতই বাড়ছে যে মনে মনে চাইলেও আমরা আমাদের প্রায়োরিটি’গুলোকে এলোমেলো করে ফেলছি। আমরা যত ব্যস্ত হচ্ছি, ততই আমাদের স্বাস্থ্য, ফিটনেস রুটিন, স্বাস্থ্যকর অভ্যাস, মানসিক সুস্থতার বিষয়গুলোকে উপেক্ষা করে চলছি।

ফেসবুক বা ফোনের কন্টাক্ট লিস্টে হয়তো বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন সকলেই আছে, কিন্তু কয়জনের সাথে আমরা দেখা করার সময় বের করতে পারছি? পার্লারে গিয়ে ফেসিয়াল, মেনিকিউর-পেডিকিউর হয়তো করছি। কিন্তু ঘাসে পা রেখে খালি পায়ে শেষ কবে হেঁটেছি মনে করতে পারছি না হয়তো। কবে শেষবার ফুলের ঘ্রান বা পাকা ধানের ঘ্রান নিয়েছি বলতেই পারবো না হয়তো। দামি হোটেলে গিয়ে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন নিয়ে চেক-ইন দিয়েছি। কিন্তু নিজের হাতে রেঁধে দাওয়াত করে খাওয়ানোর মাঝে যে অনুভূতি তার কি কোন বিকল্প আছে?

ঘুম ভাঙার পর থেকে ফের ঘুমোতে যাবার আগে পর্যন্ত আমরা কেবল ছুটেই চলি। আর দিনশেষে আক্ষেপ করি কিছুই ভালো লাগেনা আমার। এই একই অবস্থা প্রায় কমবেশি সবার। কিন্তু জীবনযাপনে সামান্য কিছু পরিবর্তন কিন্তু আমাদের এই অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে পারে।

 ভোরের রুটিন

ঘুম ভাঙার পরপরই আপনি কী করছেন, সেটাই কিন্তু আপনার সারাদিন ঠিক করে দেয়। ঘুম ভেঙে চোখ মেলেই যদি পাশ থেকে স্মার্ট ফোনটা তুলে নিয়ে ইমেইল, মেসেজ, নোটিফিকেশন চেক করতে শুরু করেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই কিন্তু আপনি আবার সেই আগের দিনের স্ট্রেস সাইকেলে ফিরে যাবেন।

business 1

এগুলো না করে জেগে ওঠার পরের ৩০ মিনিট সময় ব্যয় করুন প্রার্থনা, মেডিটেশন অথবা ভালো কোন বইয়ের কয়েকটা পাতা পড়ে। নিজেকে এই সময়টুকু দেয়ার মাধ্যমে আপনার শরীর ও মন রিলাক্স হবে। সুযোগ থাকলে কিছুক্ষন পরিষ্কার বাতাসে হেঁটে আসতে পারেন। যাদের সকালে জগিং বা ব্যায়াম এর অভ্যাস আছে তারাতো সেটা করবেনই। যারা করেন না তারাও ১০ মিনিট এর জন্য হালকা কোন ব্যায়াম করতে পারেন। সকালের এই কিছুক্ষন সময় আপনাকে সারাদিনের স্ট্রেস মোকাবেলা করার জন্য ভেতর থেকে প্রস্তুত করবে।

ভিড় কমান

ভাবছেন, ভিড় তো রাস্তায় হয়, সেটা আপনি কীভাবে কমাবেন? কিন্তু আমাদের দৈনন্দিন জীবনও নানান চিন্তা-ভাবনা, অপ্রয়োজনীয় জিনিস দিয়ে ভরে যায় কিন্তু।সেটাও এক ধরনের ভিড়। আমরা অনেকেই প্রচুর জিনিস কিনতে ভালবাসি, কিন্তু ব্যবহার করি খুব কমই। তাই নিজের চারপাশ থেকে অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরিয়ে ফেলুন। যতটা সম্ভব নিজের চারপাশ গুছিয়ে রাখুন। নিজের ওয়ারড্রব থেকেই কিছু পুরনো কাপড় সরিয়ে ফেলুন না। জমিয়ে না রেখে দিয়ে দিন কোন দুঃস্থ মানুষকে। কতটা কম জিনিস নিয়ে ভালোভাবে বেঁচে থাকা যায়, সেটা নাহয় একবার যাচাই করে দেখুন।

মন থেকে অপ্রয়োজনীয় চিন্তা দূর করুন। প্রায়োরিটিগুলোকে একের পর এক সাজান। অনেক কাজ একসাথে না করে একটি কাজই ভালোভাবে শেষ করুন।

কেমিক্যাল থেকে দূরে থাকুন

প্রতিনিয়তই এখন আমরা পরিবেশ থেকে কেমিক্যাল শরীরে নিয়ে নিচ্ছি। দূষিত বায়ু, ফরমালিন যুক্ত খাবার ইত্যাদি আমাদের ঘিরে রেখেছে। তাই কেমিক্যাল এর ব্যবহার কমানর চেষ্টা করুন। সেটা ঘর পরিষ্কারের জিনিসই হোক বা নিজের পার্সোনাল কেয়ার প্রোডাক্ট। প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। ধীরে হলেও কার্যকর এবং পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াহীন ফল পাবেন।

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন

খাদ্যাভাসের পরিবর্তন আপনাকে যেমন রোগ থেকে দূরে রাখবে তেমনি আপনাকে রাখবে ভেতর থেকে ফিট। ধূমপান, অ্যালকোহল, অতিরিক্ত চিনি, লবন, ঘন ঘন চা-কফি, চর্বিযুক্ত মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ফাস্টফুড খাওয়ার অভ্যাস কমিয়ে দিন। যেসব খাবার রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে সেগুলো খান। ছোট-খাট অসুখে চট করে গাদা গাদা ট্যাবলেট খাওয়ার অভ্যাস দূর করুন। খাবারের মেনুতে ভেষজ উপাদান রাখুন।

নিজেকে সন্তুষ্ট করুন

মাসের শেষে নিজেই নিজেকে ছোট্ট উপহার দিন। নিজের হারিয়ে যাওয়া শখ নতুন করে খুঁজে বের করুন। পছন্দের খাবার নিজের হাতে রেঁধে খাওয়ান আপন মানুষদের। বছরে একবার সম্ভব হলে বেড়িয়ে আসুন শহরের কোলাহল থেকে দূরে কোথাও। দামি ট্যুর প্যাকেজ বা কোন দর্শনীয় স্থানেই যেতে হবে কে বলেছে, নিজের গ্রামেই ঘুরে আসুন না একবার। দেখবেন নিজের মনটা খুশীতে ভরে উঠেছে।

ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

লিখেছেন – মাহাবুবা বীথি

ছবি – ফটোগ্রাফারস.ক্যানভেরা.কম


Viewing all articles
Browse latest Browse all 3010

Trending Articles