আমরা প্রতিনিয়তই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছি। আবহাওয়া পরিবর্তনের পাশাপাশি, ধুলাবালি আর ময়লায় বায়ুবাহিত নানা রোগ বাসা বাঁধছে আমাদের শরীরে। যার কারণে আমরা ফ্লু থেকে থেকে শুরু করে আরও বিভিন্ন সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হচ্ছি। এছাড়া আজকাল বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক। প্রাণঘাতী নভেল করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই বিশ্বব্যাপী চাহিদা বেড়েছে ফেইস মাস্কের। ওয়ান টাইম মাস্ক হিসেবে সার্জিক্যাল মাস্ক মানুষ বেশি ব্যবহার করে। চলুন তবে আজ আপনাদের জানাই সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহারের সঠিক নিয়ম!
সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার
ধুলা-ময়লা আর ইনফেকশনজনিত রোগ যেগুলো বাতাসে ছড়ায়, সেগুলো থেকে রক্ষা পেতে মাস্ক ব্যবহার করা খুব জরুরি। এই সময় সব থেকে বেশি যে জিনিসটি ব্যবহৃত হচ্ছে তা হলো, সার্জিক্যাল মাস্ক (surgical mask)। করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতেও এই ফেইস মাস্ক বেশ ভূমিকা রাখতে পারে। যেকোনো ফার্মেসি, সুপার শপ, মুদি দোকান এমনকি ফুটপাতেও বিক্রি হয় এই মাস্ক। তবে এই মাস্ক ব্যবহারের রয়েছে কিছু নিয়ম-কানুন। এই মাস্ক সুস্থ আর অসুস্থতার ক্ষেত্রে ব্যবহারবিধি ভিন্ন। তবে এই মাস্কের যথাযথ ব্যবহার অনেকেই না জানায়, আমরা মাস্ক ব্যবহার করছি ঠিকই কিন্তু রোগ জীবাণুর হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারছি না।
সার্জিক্যাল মাস্কের কোন দিকটি আপনার জন্য উপযুক্ত?
সার্জিক্যাল মাস্কের দুটি অংশ থাকে। একটি অংশ হালকা নীল রঙের বা অন্যান্য রং যেমন-গোলাপিও হতে পারে এবং আরেকটি অংশ সাদা রঙের। নীল অংশটি হচ্ছে ওয়াটারপ্রুফ আর সাদা অংশটি ফিল্টার, যা ভেদ করে জীবাণু ঢুকতে পারে না। আপনি যদি সুস্থ ব্যক্তি হয়ে থাকেন এবং বাইরের ধুলাবালি ও রোগ জীবাণুর আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে চান, তাহলে সাদা অংশটি বাইরে এবং নীল অংশটি ভিতরে দিকে দিয়ে পরিধান করুন। কেননা সাদা অংশ দিয়ে ফিল্টার করেই বাতাস ভেতরে ফুসফসে ঢুকবে। আর আপনি যদি ঠাণ্ডা, জ্বর, হাঁচি, কাশি বা অন্য কোনো রোগে আক্রান্ত থাকেন, তখন নীল অংশটি বাইরে রেখে সাদা অংশটি ভেতরে ব্যবহার করবেন। এতে আপনার মুখ থেকে ক্ষতিকর কিছু বাইরে যেতে বাঁধা পাবে এবং অন্য কেউ সহজে আক্রান্ত হবে না।
কিছু ভুল ও সংশোধনীসমূহ
১) সার্জিক্যাল মাস্ক কতবার ব্যবহার যোগ্য
বেশির ভাগ মানুষই সাদা অংশটি মুখের ভেতরে রাখে এবং একই মাস্ক দিনের পর দিন ব্যবহার করতে থাকে। সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো, তবে তা ওয়ানটাইম ব্যবহার করতে হয়। বাজারে এক লেয়ারের মাস্কও পাওয়া যায়, যা ধুলা-ময়লা থেকে আমাদের বাঁচাতে পারলেও রোগ প্রতিরোধে কোন কাজই করে না। কাজেই সেগুলো ব্যবহার করা ঠিক নয়।
২) একটি মাস্ক কত সময় ব্যবহার করা যাবে?
মনে রাখবেন, একটি মাস্ক একবারের বেশি ব্যবহার করবেন না। নিয়ম অনুযায়ী একটি মাস্ক ২ ঘণ্টার চেয়ে বেশি পড়ে রাখা যায় না। কিন্তু আমাদের পক্ষেতো আর বার বার এই মাস্ক পরিবর্তন করা সম্ভব না। কাজেই সর্বোচ্চ এক দিন ব্যবহার করবেন এবং ব্যবহার শেষে যেখানে সেখানে না ফেলে রোগ জীবাণু যেন না ছড়ায় সেভাবে কাগজের প্যাকেটে মুড়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিন।
৩) নাকের উপর থেকে থুতনির নীচ পর্যন্ত মাস্ক রাখা
অনেকে তো আবার সঠিকভাবে মাস্ক পড়তেই পারে না। দেখা যায় মাস্ক পড়ার সময় নাক খোলা রেখে শুধু মুখ ঢেকে রাখে। মাস্ক পরিধানের সময় মেটাল অংশটাকে নাকের উপরের অংশ থেকে চেপে রেখে একবারে থুতনির নীচ পর্যন্ত টেনে নিয়ে পরতে হবে।
৪) কথা বলার সময় করনীয়
আবার অনেকেই আছেন যারা মাস্ক থুতনি পর্যন্ত খুলে রেখে কথাবার্তা বলেন। এটাও ঠিক নয়। এতে লেগে থাকা জীবাণু সহজেই দেহে ছড়িয়ে পড়ে। কাজেই কথা বলার সময় মাস্ক পুরোপুরি খুলে নিয়ে কথা বলতে হবে।
আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা উপকৃত হবেন। সঠিক নিয়মে নিজে মাস্ক ব্যবহার করুন এবং অন্যকে ব্যবহার করতে বলুন। এতে নিজে যেমন সুস্থ থাকবেন, আশেপাশের মানুষগুলোও সুস্থ থাকবে!
ছবি- সংগৃহীত: মুক্তখবর + সাজগোজ
The post সার্জিক্যাল মাস্ক সঠিক নিয়মে ব্যবহার করছেন তো? appeared first on Shajgoj.