Quantcast
Channel: Shajgoj
Viewing all articles
Browse latest Browse all 3010

ভুটান ভ্রমণ |ঘুরে আসুন বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশটিতে

$
0
0

ছবির মত করে সুন্দর গোছানো একটি দেশ ভুটান, যাকে সুখী মানুষের দেশও বলা হয়। বাংলাদেশ থেকে ভুটানের দূরত্ব মাত্র ৮২২ কি.মি. এর মতো। তাই খুব অল্প সময়ে প্লেনে করেও যাওয়া যায় কিংবা বাসে করেও যাওয়া যায়। দুটো পথে দুই রকমের অভিজ্ঞতা হবে। তবে আপনি যেই পথেই ভ্রমণ করুন না কেন যদি ভুটান ঘুরতে যাবার ইচ্ছে থাকে তবে খুব দ্রুত প্ল্যান করে ফেলুন। আজকের পর্বে আপনাদের জানাবো ভুটান ভ্রমণের বেসিক কিছু বিষয়। চলুন তাহলে জেনে নেই কোথায় থাকবেন এবং কিভাবে যাবেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা পাহাড়ের দেশ ভুটান।

ভুটান ভ্রমণ

পৃথিবীতে যেসব দেশে পর্যটকদের সবচেয়ে বেশী ভ্রমণ ফি দিতে হয় সেগুলোর মধ্যে ভুটান অন্যতম।
ভুটানে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের বিভিন্ন ধরনের ফি বাবদ প্রতিদিন ২৫০ ডলার দিতে হতো। কিন্তু সার্কভুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ, ভারত ও মালদ্বীপের পর্যটকদের কাছ থেকে এই ভ্রমণ ফি নেয়া হতো না। তবে নতুন একটি খসড়া নীতি খুব অল্প কিছুদিনের মধ্যেই কার্যকর হয়ে যাবে যার ফলে আঞ্চলিক পর্যটকদের মাথাপিছু প্রতিদিন প্রায় ১৪০০ টাকা করে দিতে হবে। এর ফলে ভুটান ভ্রমণের খরচ আরও কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।

বিমান পথে ভুটান যাওয়ার উপায়

বিমানে করে ভুটান যেতে চাইলে আগে থেকে ভিসা প্রসেসিং এর কোন দরকার নেই। বাংলাদেশের নাগরিকদের ভুটানে অন এরাইভাল ভিসা দেয়া হয়। বাংলাদেশ থেকে ভুটানে শুধু মাত্র একটি এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করে- দ্রুক এয়ার। টিকেটের মূল্য সময় ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। সাধারনত ২০,০০০ – ২২,০০০ টাকা মাথাপিছু। ভুটানে একটি ই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট যেটা পারোতে অবস্থিত।

বাই রোডে ভুটান যাওয়ার উপায় 

বাই রোডে ভুটান যেতে হলে প্রথমেই দরকার হবে ভারতের ট্রানজিট ভিসা। কারন বাংলাদেশের সাথে ভুটানের কোন বর্ডার নেই। ঢাকা থেকে বুড়িমাড়ি/ চেংড়াবান্ধা বর্ডার দিয়ে সীমান্তে প্রবেশ করে সেখান থেকে বাস কিংবা ট্যাক্সি করে ভুটানের বর্ডার জয়গাঁ/ ফুন্টশোলিং দিয়ে ভুটানে প্রবেশ করা যায়। এক্ষেত্রে সময় লাগে প্রায় ২৪ ঘণ্টা। কিন্তু সুবিধা হচ্ছে খরচ কম হয় এবং সারা পথের সুন্দর সব দৃশ্য উপভোগ করা যায় আর সময় থাকলে ফুন্টশোলিং এলাকাটাও একদিন থেকে ঘুরে দেখা যায়।

ভ্রমণ করার উপযুক্ত সময়

ভুটান বেড়ানোর উপযুক্ত সময় হল সেপ্টেম্বর-নভেম্বর। কেননা এই সময়ে বৃষ্টি হয় না, আকাশ পরিষ্কার থাকে, আবহাওয়া সুন্দর থাকে এবং খুব বেশী ঠাণ্ডা পড়ে না। শীতকালে ভুটানে প্রচুর ঠাণ্ডা পড়ে এমনকি বরফ জমে রাস্তা-ঘাট বন্ধ হয়ে যায়। যারা বরফ উপভোগ কিংবা স্নোফল দেখতে চান তারা চাইলে শীতেও ঘুরে আসতে পারেন। তবে বর্ষাকালে না যাওয়াই ভালো। কারণ বর্ষাকালে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। তবে সেপ্টেম্বর-নভেম্বর ভুটানে পিক সিজন তাই সবকিছুর দাম বেশী থাকে, বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক পর্যটক ঘুরতে আসেন এই সময়ে।

ঘুরে দেখতে কিরকম সময় লাগতে পারে

৩৮,৩৯৪ স্কয়ার কিলোমিটারের দেশ ভুটানে মোট ২০টি শহর আছে। তাই আপনি যদি খুব ধীরে সুস্থে সময় নিয়ে পুরো ভুটান ঘুরে দেখতে চান তবে মাস খানেক সময় লেগে যাবে। তবে থিম্পু, ফুন্টশোলিং, পুনাখা, পারো, গেলেফু, সমদ্রুপ ঝংকার এরকম কয়েকটা শহর ঘুরলে পুরো ভুটান সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যাবে। আর তার জন্য ১০-১৫দিনের একটা ট্যুর প্ল্যান করতে পারেন।

আনুমানিক খরচ 

বাই রোডে গেলে বাংলাদেশের একজন মানুষ ১৫,০০০ – ২০,০০০ টাকায় ভুটান ঘুরে আসতে পারে। তবে আপনি কেমন হোটেলে থাকছেন, কি ধরনের খাবার খাচ্ছেন, কতদিন থাকছেন এগুলো অনেক বিষয়ের ওপর ভ্রমণের খরচ নির্ভর করে। আমি আমার এই আর্টিকেলের পরবর্তী পর্বগুলোতে ফিক্সড খরচ যেমন- বাস ভাড়া, ভিসা প্রসেসিং ফি ইত্যাদি খরচগুলো সম্পর্কে একটা ধারণা দিতে পারবো।

ভুটান ভ্রমণের ক্ষেত্রে কিছু টিপস 

ভুটানের লোকজন খুবই শান্তিপ্রিয় এবং ধর্মভীরু মানুষ। প্রতিটি দেশেরই আলাদা কিছু নিয়ম এবং সংস্কৃতি থাকে। যেকোন দেশ বা স্থান ভ্রমণের আগে সেখানকার সংবেদনশীল তথ্যগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া ভালো।

১) অন্যান্য যেকোনো দেশের মতোই ভুটানেও যদি কম খরচে ভ্রমণ করতে চান তাহলে অফ সিজনে যেতে পারেন। ঐ সময়ে বিমানের টিকেট, হোটেল ভাড়া, ট্যাক্সি ভাড়া অনেক কমে পাওয়া যায়।

২) বাংলাদেশের সময় আর ভুটানের সময় একই। ভুটানের মানুষ খুবই আরামপ্রিয়। সকাল ১০টার আগে কোন খাবারের দোকান খোলে না। তাই যদি সকাল সকাল কোথাও বেরোনোর প্ল্যান থাকে তাহলে আগের রাতে দোকান থেকে শুকনা কিছু খাবার কিনে রাখুন সকালে খাওয়ার জন্য।

৩) রাত ৮টার মধ্যে সমস্ত দোকান রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে যায়। তাই এর মধ্যেই রাতের খাবার খেয়ে নিন। তা না হলে সারা রাত না খেয়েই থাকতে হবে।

৪) ভুটানে ইন্ডিয়ান রুপি এবং ওদের নিজস্ব মুদ্রা গুলট্রামের মান সমান এবং এই দুটোর যেকোনোটি দিয়েই লেনদেন করা যায়।

৫) ভুটানে বাংলাদেশের তুলনায় আবহাওয়া একটু ঠাণ্ডা থাকে। তাই হালকা শীতের কাপড় সাথে রাখবেন যে সময়ই যান না কেন। তবে শীতের সময় গেলে খুব ভারী শীতের কাপড় নিয়ে যেতে হবে।

৬) রাজপ্রাসাদের একটি নির্দিষ্ট এলাকা জুড়ে হ্যাট, ক্যাপ কিংবা মাথায় ছাতা নিয়ে হাঁটতে পারবেন না। ঠিক একই নিয়ম যেকোনো টেম্পল বা মনাস্টেরীতে ঘোরার ক্ষেত্রেও।

৭) ভুটানের রাজা, রাজ পরিবার কিংবা ধর্ম নিয়ে ভুলেও কোন মন্তব্য করবেন না।

৮) ভুটানের রাস্তাঘাট খুবই পরিষ্কার, তাই রাস্তায় যেখানে সেখানে ভুলেও কিছু ফেলবেন না। এতে অনেক টাকা জরিমানাও গুনতে হতে পারে।

৯) ভুটান ১০০% ধূমপান মুক্ত দেশ। তাই পাবলিক প্লেসে কিংবা হোটেল রুমে ধূমপান করার কথা ভুলেও ভাববেন না।

১০) সবসময় জেব্রা ক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হবেন।

১১) সবসময় চেষ্টা করবেন ফুল স্লিভ জামা পরতে, পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত প্যান্ট পরতে। কেননা থ্রি কোয়ার্টার, শর্টস কিংবা হাফ হাতা জামা পরে কোন টেম্পল বা মনাস্টেরী (monastery) যেতে পারবেন না।

বেসিক তথ্য সব দিয়ে দিয়েছি এই আর্টিকেলে। বাকী সব তথ্য এর পরের পর্বে লিখবো। সেই পর্যন্ত ভালো থাকুন।

 

ছবি- সংগৃহীত: আশিক আফরীক

The post ভুটান ভ্রমণ | ঘুরে আসুন বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশটিতে appeared first on Shajgoj.


Viewing all articles
Browse latest Browse all 3010

Trending Articles