কোরিয়ান মেয়েদের কথা মনে আসতেই চোখে যেন ভেসে ওঠে হেলদি, রেডিয়েন্ট, পোরলেস আর ডিউয়ি টাইপ স্কিনের একটা মুখাবয়ব। সৌন্দর্য সচেতনতা আর স্টেপ ওয়াইজ স্কিন কেয়ার রুটিনের মাধ্যমে তারা অলরেডি বিউটি ওয়ার্ল্ডে জনপ্রিয়। তাদের প্রোডাক্টের থেকে শুরু করে স্কিন কেয়ার ওয়ে এবং লাইফ-স্টাইল সবকিছুই ইউনিক। কে-বিউটি বা কোরিয়ান বিউটি ট্রেন্ড কিন্তু এখন সারা পৃথিবীতে রাজত্ব করছে। আমাদের সবার আগ্রহও তাই কোরিয়ান স্কিন কেয়ার স্টেপস নিয়ে। চলুন জেনে নেই তবে কোরিয়ান স্কিন কেয়ার সম্পর্কে!
কোরিয়ান স্কিন কেয়ার স্টেপস ৭টি
কোরিয়ান স্কিন কেয়ার রুটিনকে যদি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নিয়ে আসা যায়, তাহলে কেমন হয় বলুন তো? এটা ঠিক যে, আবহাওয়ার ধরন আলাদা হওয়ায় তাদের বিউটি রুটিনের সব স্টেপস আমরা পুরোপুরি মেইনটেন করতে পারবো না। খুব সিম্পলভাবে কোরিয়ান স্কিন কেয়ার রুটিন ফলো করে কিভাবে বাড়িতে বসে আপনি ত্বকের যত্ন নেবেন এবার তাই জানবো।
১) ক্লেনজিং
কোরিয়ান স্কিন কেয়ার রুটিনে প্রথম ধাপ হচ্ছে অয়েল এবং ফোম ক্লেনজারের মাধ্যমে স্কিনকে প্রোপারলি ক্লিন করা। ডাবল ক্লেনজিং-এ অয়েল বেইজড ক্লেনজার ত্বকের সিবাম আর পল্যুটেন্ট ক্লিন করে আর ফোম ক্লেনজার ডার্ট রিমুভ করে স্কিনকে পরিষ্কার রাখে। বিভিন্ন কোরিয়ান ব্র্যান্ডের স্কিন কেয়ার রেঞ্জে আপনি তাদের ফোম ও অয়েল বেইজড ক্লেনজার পাবেন। সময় নিয়ে আলতো হাতে নিচে থেকে উপরে ম্যাসাজ করুন। এরপর একটা পাতলা কাপড় উষ্ণ গরম পানিতে ডুবিয়ে সেটি দিয়ে মুখটা মুছে নিন।
২) এক্সফোলিয়েট
কোরিয়ান স্কিন কেয়ারে এক্সফোলিয়েট হিসাবে ব্ল্যাক সুগার ব্যবহারের কথা অনেকেই জানেন। এক্সফোলিয়েট ব্ল্যাকহেডস রিমুভ করে, স্কিনকে ভেতর থেকে পরিষ্কার করে চকচকে ভাব আনে। ফেসিয়াল ম্যাসাজে হাতের মুভমেন্টও গুরুত্বপূর্ণ। বেশী ঘষাঘষি করা যাবে না। সারকুলার ওয়েতে আঙ্গুল দিয়ে অ্যাপ্লাই করুন, ব্ল্যাক সুগার যখন মেল্ট হয়ে যাবে, পর্যাপ্ত পানি দিয়ে মুখে ঝাপটা দিন এবং ধুয়ে ফেলুন।
৩) টোনিং
স্কিন কেয়ারের যেই পার্টটা আমরা অনেকেই স্কিপ করি সেটা হচ্ছে টোনিং। কোরিয়ানরা তাদের টোনারে বিভিন্ন উপাদান মিলিয়ে দেয় যেটা ত্বকের স্পেসিফিক প্রবলেমকে ডিল করে। উপাদানটি হতে পারে বোটানিক ইনগ্রিডিয়েন্স, হায়ালুরনিক এসিড, মিল্ক কিংবা টি-ট্রি এলিমেন্ট। টোনার আপনার ত্বকের পি এইচ ব্যালেন্স ধরে রাখ, রাফনেস রিপেয়ার করে আর স্কিনকে টাইট রাখে। তাই, হেলদি আর রেডিয়েন্ট স্কিন পেতে টোনিং করা অবশ্যই দরকার। কটোন প্যাড দিয়ে টোনার ভালোভাবে মুখে অ্যাপ্লাই করে নেবেন। এইতো হয়ে গেল টোনিং পার্ট!
৪) অ্যাসেন্স অ্যাপ্লাই
“অ্যাসেন্স! সেটা আবার কী???” জানি, এটাই চিন্তা করছেন অনেকে। কোরিয়ান স্কিন কেয়ারের একটি ধাপ হচ্ছে অ্যাসেন্স অ্যাপ্লাই করা। এটা আপনার কাছে নতুন লাগতে পারে, কিন্তু অ্যাসেন্স অ্যাপ্লাই কোরিয়ান স্কিন কেয়ারের বেসিক একটা পার্ট। ডিউয়ি আর সফট স্কিনের জন্য বিভিন্ন কোরিয়ান ব্র্যান্ডের স্কিন কেয়ার রেঞ্জ থেকে আপনাকে এই প্রোডাক্টটি বেছে নিতে হবে। কিন্তু কী আছে এই অ্যাসেন্সে? সাধারণত অ্যাসেন্স তৈরি হয় বিভিন্ন হারবাল/প্লান্ট এক্সট্র্যাক্ট আর ফারমেন্টেড কম্পোনেন্ট দিয়ে যেটা ত্বককে ভেতর থেকে রিপেয়ার করে আর হেলদি গ্লো দেয়। দুই-তিন ফোটা অ্যাসেন্স নিয়ে আপনার ফেইসে অ্যাপ্লাই করুন আর হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন। ব্যস! হয়ে গেল আপনার অ্যাসেন্স অ্যাপ্লাই করা!
৫) শীট মাস্ক অ্যাপ্লাই
কোরিয়ান স্কিন কেয়ার রুটিনে শীট মাস্ক অ্যাসেনশিয়াল একটা পার্ট। বেরি, মধু, অ্যালোভেরা, টমেটো, গ্রিন টি আরও কত উপাদান তারা যোগ করেছে শীট মাস্কের কালেকশনে! এক কথায় বলতে গেলে শিট মাস্ক হচ্ছে প্যাকেটজাত ফেসিয়াল মাস্ক। আগে থেকে এটা প্রিপেয়ার করা থাকে মানে একটি প্যাকেটে অ্যাসেন্স অথবা সিরামে ভেজানো একটি মাস্ক থাকে। মাস্কটি মুখে লাগিয়ে রেখে ১৫-২০ মিনিট পরে সিরাম স্কিনে শুষে নিলে মাস্কটি তুলে ফেলে দিতে হয়। কিন্তু এরপর মুখ ধোয়ার প্রয়োজন নেই। বিভিন্ন শীট মাস্কের প্রোপার্টিজ আলাদা, তাদের ভেরিয়েন্ট শীট মাস্কের কালেকশন থেকে আপনার স্কিন অনুযায়ী বেছে নিতে পারবেন। আপনি যদি হন কর্মজীবী নারী অথবা ইউনিভার্সিটি/কলেজ পড়ুয়া, তাহলে তো এটা আপনার বিজি লাইফের ইজি সল্যুশন হয়ে যাবে!
৬) ময়েশ্চারাইজিং
কোরিয়ান স্কিন কেয়ারে ময়েশ্চারাইজার মানেই কিন্তু জাস্ট একটা সাদা ক্রিমের বক্স নয়। শুদিং জেল, ওভার-নাইট মাস্ক, অ্যালোভেরা, ক্রিম, ভিটামিন-ই সহ আরো কত কী আছে ওদের ঝুলিতে। প্রোপার ময়েশ্চারাইজারের মাধ্যমে আগের স্টেপের লেয়ারগুলো সিল হয়ে যায় এবং এতে আপনার ত্বক হায়েস্ট বেনিফিট পাবে। ময়েশ্চারাইজিং-এর গুরুত্ব আমরা সবাই কম বেশি জানি কিন্তু কোরিয়ান ময়েশ্চারাইজারে আছে এক্সট্রা কিছু। যেমন- টমেটো, গ্রেপ, স্নেইলের এক্সট্রাক্ট যেটা অবশ্যই আপনার স্কিনকে পুষ্টি যোগাবে আর পোর মিনিমাইজ করে স্মুদ করবে।
৭) প্রোটেকটিং
স্কিন কেয়ারতো করলেন, এবার রোদ থেকে স্কিনকে রক্ষা করার পালা। ফিজিক্যাল আর কেমিক্যাল- দুই ধরনের সানস্ক্রিনের কালেকশন আছে তাদের। ফিজিক্যাল সানস্ক্রিন সাধারণত মিনারেল-বেইজড যেটা স্কিনে সাদা লেয়ার ক্রিয়েট করে। কেমিক্যাল সানস্ক্রিন দ্রুত স্কিন বসে যায় এবং স্কিনকে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে প্রোটেক্ট করে। তাদের অনেক সানস্ক্রিনে ময়েশ্চারাইজিং প্রোপার্টিজ আছে। আপনি কখনই চাইবেন না রোদে আপনার স্কিন কালচে হয়ে যাক বা ফাইন লাইন পরুক। তাই, বাসা থেকে বের হওয়ার আগে সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না।
এই হচ্ছে কোরিয়ানদের ইয়াং-লুকিং আর চকচকে স্কিনের রহস্য। তাদের স্কিন কেয়ার রুটিনে আরও কিছু স্টেপস আছে যেটা আমাদের দেশের ওয়েদারের সাথে মানানসই নয় বলে স্কিপ করেছি। এখন প্রশ্ন হলো কোথায় পাবো অরিজিনাল কোরিয়ান স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট? শপ.সাজগোজ.কম এ আছে কে-বিউটি ক্যাটাগরি। এতে আছে কোরিয়ার নাম করা ব্র্যান্ডের বিভিন্ন কালেকশন। আপনি অনলাইনে অথেনকটিক স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে। তাছাড়া, সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপে নিজে গিয়েও কিনতে পারেন, যা যমুনা ফিউচার পার্ক ও সীমান্ত স্কয়ারে অবস্থিত। আজ এ পর্যন্তই। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন!
ছবি- সংগৃহীত: সাজগোজ; দ্য ডেইলি ডট.কম; হার.আইই
The post কোরিয়ান স্কিন কেয়ার স্টেপস | ৭টি ধাপেই পান সুন্দর ত্বক appeared first on Shajgoj.