Quantcast
Channel: Shajgoj
Viewing all articles
Browse latest Browse all 3048

কম ঘুমিয়েও সতেজ থাকুন

$
0
0

ব্যস্ত জীবনে আমাদের যেন এখন বিশ্রামেরও সময় হয়ে ওঠে না। ক্লাসে গিয়ে শুনলেন, কালই ক্লাসটেস্ট অথবা অফিসের নতুন প্রজেক্ট জমা দিতে হবে দুদিনের ভেতর। কিংবা সাপ্তাহিক ছুটির দিনে একটু বেড়াতে গেলেন শহরের বাইরে কোথাও, সারারাত জার্নি করে পরের দিন সকাল থেকেই আবার অফিস বা ক্লাস। এরকম সময়ে ঘুমানোর সময় পাওয়া যায় কম। আর কম ঘুম প্রভাব ফেলে আমাদের শরীরের ওপর। বাড়িয়ে দেয় ক্লান্তি আর কমায় কর্মদক্ষতা। কিন্তু আজকের যুগে তা হলে চলবে কেন? সময়ের কাজ তো সময়মত এবং সঠিক ভাবেই জমা দিতে হবে। তাই চলুন জেনে নিই, কম ঘুমিয়েও কীভাবে সারাদিন ধরে রাখবেন নিজের কর্মদক্ষতা।

সাধারণত সারাদিন কর্মদক্ষতা ধরে রাখার জন্য আমাদের প্রয়োজন ৮ ঘণ্টা ঘুম। কিন্তু কেউ কেউ থাকেন যাদের অল্প ঘুমালেও চলে। এরকম শর্ট স্লিপাররা শারীরিকভাবে সুস্থ থাকেন এবং এটা সাধারণত হেরেডিটরি।

এবার জেনে নিই কম ঘুমিয়েও সারাদিন সতেজ থাকার কিছু টিপস।

১। সকালে যদি আপনার ব্যায়াম বা হাঁটার অভ্যাস থাকে তাহলে সেটি কোনোভাবেই বাদ দেবেন না। আর যদি সেরকম অভ্যাস না থাকে তাহলেও চেষ্টা করুন হালকা ব্যায়াম করতে। ব্যায়াম আপনার শরীরের তাপমাত্রা বাড়ায় এবং প্রয়োজনীয় হরমোন ও এন্ডরফিন রিলিজ করতে সাহায্য করে, যা আপনার শরীরের এনার্জি বৃদ্ধিতে সহায়ক।

২। শীতের সময় না হলে ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করুন। আর শীতের সময়ে তুলনামূলক কম গরম পানি ব্যবহার করুন।  ঠাণ্ডা পানিতে গোসল ব্রেনে অক্সিজেন সাপ্লাই বাড়ায়, ব্রেন ফাংশন ভালো রাখে। এতে করে অনেক বেশি ফ্রেশ লাগে এবং চিন্তার লজিক ঠিক থাকে।

৩। সকালের নাস্তাটা করুন গুছিয়ে। পুষ্টিকর খাবার খান। মিষ্টি জাতীয় খাবার খাবেন না, এমনকি বেশি মিষ্টি ফল (কলা) ও খাবেন না। যতটা সম্ভব কম শর্করা খান। কর্ণফ্লেক্স, টোষ্ট খেতে পারেন  তবে ভাত বা খিচুড়ি নয়। দুধ বা টক দই, পনির খেতে পারেন। এগুলো আপনাকে একটা ভরপেট অনুভুতি দেবে কিন্তু ক্লান্তি আনবে না। খেতে পারেন এক মুঠো বাদাম, তাজা সবজির এক বাটি সালাদ।

৪। ঘুম কাটাতে বার বার চা/কফি খাবেন না বা এক সাথে ২/৩ কাপ চা/কফি খেতে যাবেন না, এতে ঘুম কাটার পরিবর্তে আরও ক্লান্তি চেপে বসতে পারে। প্রতি ৪ ঘণ্টায় এক কাপ চা/কফিই যথেষ্ট। অথবা খেতে পারেন এক টুকরো ডার্ক চকলেট। তবে যাই খান তা যেন অতিরিক্ত মিষ্টি নাহয়। একেবারে চিনি ছাড়া খেতে পারলে ভালো, সেটা সম্ভব না হলে খুব অল্প মিষ্টি দিয়ে খান।

৫। অফিসে বা ক্লাসে যাওয়ার পথে ফাস্ট বীটের গান শুনুন। গানেরগতি ব্রেন ওয়েভ বাড়ায়, যা নার্ভ সিস্টেমকে উদ্দীপিত করে।

৬। সম্ভব হলে খুব জরুরি মিটিং বা কাজগুলো দিনের শুরুতেই করার চেষ্টা করুন। নিতান্তই সেটা সম্ভব না হলে চেষ্টা করুন কয়েক ঘণ্টা কাজের পরে আধাঘণ্টার মত বিশ্রাম নিয়ে দিনের পরবর্তী ভাগের কাজ শুরু করার।

৭। দুপুরের খাবারে রাখুন প্রোটিন সমৃদ্ধ ও লো ফ্যাট খাবার। প্রোটিন ব্রেনে এমিনো এসিড সরবরাহ করে, যা কাজের প্রতি মনোযোগ বাড়ায়।

৮। একটানা চেয়ারে বসে না থেকে হাঁটা চলা করুন। খাবার অর্ডার না করে নিজেই গিয়ে নিয়ে আসুন। কাজের ফাঁকে বন্ধু বা কলিগের সাথে নিজেই গিয়ে দেখা করে আসুন। লিফট ব্যবহার না করে সিঁড়ি দিয়ে উঠুন।

৯। খুব ক্লান্ত লাগলে সহজ ব্রিদিং এক্সারসাইজ করুন। লম্বা শ্বাস নিয়ে ৩ সেকেন্ড ধরে রাখুন, তারপর আস্তে আস্তে ছেড়ে দিন। এতে ব্রেন এক্সট্রা এনার্জি তৈরি হবে।

১০। ফ্রুট জুস খান। উজ্জ্বল আলোতে কাজ করুন। দিনের শেষে অল্প হাঁটুন।

কাজের ব্যস্ততা থাকলে ২/১ দিন কম ঘুমালেও সেটা যেন প্রতিদিনের রুটিন না হয়ে দাঁড়ায় সেটা খেয়াল রাখা উচিৎ। অযথা ফেসবুক চ্যাটিং করে রাতে না ঘুমালে সেটার প্রভাব দিনের কাজের ওপর পড়বেই। যার শরীর যতটা চায় তার চেয়ে কম ঘুমানো একেবারেই ঠিক না। কম ঘুমালে ডিপ্রেশন বাড়ে, চিন্তার লজিক ঠিক থাকেনা, স্মৃতিশক্তি কমে, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, ইমিউন সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই চেষ্টা করুন প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে এবং একই সময়ে ঘুম থেকে উঠতে।

ভালো থাকুন।

লিখেছেন – মাহবুবা বীথি

ছবি – অ্যাডামরোসানতে.কম


Viewing all articles
Browse latest Browse all 3048

Trending Articles