Quantcast
Channel: Shajgoj
Viewing all articles
Browse latest Browse all 3010

ত্বকের বলিরেখা |কী, কারণ ও দূর করার কার্যকারী ঘরোয়া উপায় জানেন কী?

$
0
0

সময় ঘড়ির কাটা যখন তারুণ্যের কোঠা পেরোতে থাকে তখন যেন ত্বকের বলিরেখার কথা হরহামেশাই শোনা যায়। এই বলিরেখাকে বুড়িয়ে যাবার লক্ষণ ধরে স্বাভাবিক মনে মেনে নেই। কিন্তু মাঝে মাঝে সমবয়সী কাউকে যখন খুব সুন্দর টানটান ত্বকের অধিকারী দেখেন, তখন অজান্তেই মনটা খারাপ হয়ে যায়। তাই না? আচ্ছা, সমবয়সী হবার পরও দুজনের ত্বকের এমন ভিন্নতা কেন? বলিরেখা একজনের আগে আবার একজনের পরে দেখা যায় কেন? আজ আপনাদের সাথে ত্বকের বলিরেখা নিয়েই আলোচনা করব। চলুন তবে জেনে নেই ত্বকের বলিরেখা কী, এর কারণ ও কিভাবে এটি রোধ বা দূর করা যায়!

ত্বকের বলিরেখা নিয়ে যত কথা

বলিরেখা কী?

আমাদের যখন বয়স বাড়ে, তখন কোষের কার্যক্ষমতা কমে যায়। অর্থাৎ, জৈবিক ক্ষমতা হ্রাস পায়। এই প্রক্রিয়াটি শরীরে, বিশেষ করে ত্বকে সহজেই ফুটে ওঠে। মানুষের বয়স হলে এনজাইম কাজ করা বন্ধ করে দেয়। তখন ত্বকে যে রেখা ফুটে উঠে তাই বলিরেখা।

বলিরেখা হবার কারণ

অনেক কারণে একজন ব্যক্তির শরীরে বা ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে পারে। যেমন- বংশগতি, জীবনধারা, খাদ্যাভ্যাস এবং যে পরিবেশে সে বাস করে ইত্যাদি। বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাসলে বেশির ভাগ মানুষের ক্ষেত্রে গালে, চোখের চারপাশে বলিরেখার ভাঁজের সৃষ্টি হয়। যা বয়সের সবচেয়ে খারাপ চিহ্ন। এটা শুধু যে বয়সের চিহ্ন তা নয় অনেক সময় কোনো কারণে কোলাজেনের উৎপাদন কমে গিয়ে ত্বকের ইলাস্টিসিটি কমে গেলেও এমন হতে পারে। আবার অন্যান্য কারণেও হতে পারে যেমন অত্যাধিক মানসিক চাপ, অতিরিক্ত ধূমপান, পানি কম খাওয়া, কম ঘুমানো, ত্বকে অতিরিক্ত আলট্রা ভায়োলেট রশ্মির প্রভাব ইত্যাদি।

ত্বকের বলিরেখা রোধ ও দূর করার উপায়

দোকানে এমন অনেক প্রসাধন রয়েছে যা ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ার গতিকে ধীর করতে সাহায্য করতে পারে। এছাড়াও চোখের যত্নে আমরা রেটিনল যুক্ত আইক্রিম ব্যবহার করতে পারি। এক্ষেত্রে ভালো ব্র্যান্ডের আইসক্রিম কিনতে হবে। ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ার গতিকে ধীর করার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে জীবনযাপনের ধারা পাল্টানো। এর মধ্যে খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম (৮ ঘন্টা) উল্লেখযোগ্য। এর মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে খাদ্যাভ্যাস। এই অভ্যাস বয়সের ছাপ পরার আগেই শুরু করা উচিত। অনেক ধরনের খাবারই রয়েছে যা ত্বকের স্বাস্থ্য ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে পারে।

ত্বকের বলিরেখা প্রতিরোধে কিছু খাবার

১) গাঢ় সবুজ শাক-সবজি

 

গাঢ় সবুজ শাক-সবজিতে আছে প্রচুর খনিজ উপাদান ও ভিটামিন এ, সি এবং ই। এগুলো কোলাজেন তৈরির জন্য দরকারি। খাদ্য তালিকায় শাক, বিশেষ করে পালংশাক, ব্রকলি, বাঁধাকপি, শালগম ,ডাটা ও শিম রাখুন। বেশির ভাগ সবজি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়াতে বেশি করে সবজি খেলে তা ত্বকে বার্ধক্য আসার গতিকে ধীর করে দেয়। বেশি করে সবজি খান, সেটা কাঁচাই হোক বা রান্না করেই হোক।

২) বেদানা

বেদানায় থাকে দ্রুত হিমোগ্লোবিন তৈরির উপাদান। শুধুমাত্র হিমোগ্লোবিন তৈরির উপাদানই নয়, এতে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। ফলে ত্বকের বলিরেখা রোধে এই ফলটি খুব কার্যকরী।

৩) সবুজ চা

ফল ও সবজির মতো সবুজ চাও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। গবেষণায় জানা যায় যে, এটি সূর্য রস্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বককে রক্ষা করে যা ত্বকে বলিরেখা সৃষ্টির জন্য দায়ী।

৪) গাজর

গাজর ত্বকের জন্য খুবই উপকারি এবং প্রচুর পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে। ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষণাবেক্ষণ ও বলিরেখা রোধে গাজর খাওয়া অত্যাবশ্যক।

৫) টমেটো

টমেটো তে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। কাজেই প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় টমেটো রাখা উচিত।

৬) লেবু

ত্বকের বলিরেখা ও ক্ষত দূর করতে লেবুর জুড়ি নেই। রোজ সকালে চিনি ছাড়া এক গ্লাস লেবুর রস খেলে ত্বক সজীব থাকে।

৭) কাঠবাদাম

কাঠবাদামে প্রচুর ভিটামিন ই, সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। ভিটামিন ই ভিটামিন সি এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে কোলাজেন তৈরি করে। তাই ৩০ বছর বয়সের পর নিয়মিত পাঁচ-ছয়টি করে কাঠবাদাম খাদ্যতালিকায় রাখুন।

৮) টক দই

বলিরেখা কমাতে টক দইয়ের জুড়ি নেই। দইয়ের মধ্যে রয়েছে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ারোধী উপাদান,যা রোগ-প্রতিরোধ পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণ করে, প্রদাহরোধ করে বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে।

৯) পাকা পেঁপে

উজ্জ্বল কমলা রঙের এই ফলটি কার্যকর ভাবে মুখের ত্বকের বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে।

ত্বকের বলিরেখা দূরীকরণে ঘরোয়া টিপস

বলিরেখা রোধে ত্বকের বাহ্যিক কিছু চর্চাও গুরুত্বপূর্ণ। ঘরোয়া উপায়ে যদি নিয়মিতভাবে সেই উপায়গুলো মেনে চলা যায় তাহলে বলিরেখা দূর করে ত্বকের বয়স বেশ কয়েক বছর কমিয়ে ফেলা সম্ভব। চলুন তবে দেখে নেই এবার……

১) জোজোবা অয়েল 

জোজোবা অয়েলে ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করবার গুণ থাকে। এই তেল চটচটে নয়। প্রতিদিন এর ব্যবহার ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখে এবং ত্বকের বলিরেখা রোধ করে।

২) গোলাপজল

গোলাপজল ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। দুই চা চামচ গোলাপ জল, তিন-চার ফোঁটা গ্লিসারিন এবং অর্ধেকটা লেবুর রস দিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। একটি তুলোর বলে এই প্যাকটি ভিজিয়ে প্রতিরাতে ত্বকে ব্যবহার করুন। এটি ত্বকের বলিরেখা পড়া রোধ করে  ত্বকের নমনীয়তা বৃদ্ধি করে থাকে।

৩) অ্যালোভেরা জেল

অ্যালোভেরা জেল ক্ষতিগ্রস্ত ত্বককে মেরামত করে, ত্বককে আর্দ্র ও টানটান করে বলিরেখা রোধ করে।

৪) শসার প্যাক

শসাতে সিলিকা নামক একটি উপাদান আছে যা ত্বকের চামড়া ঝুলে যাওয়া রোধ করতে সাহায্য করে । ৩ চা চামচ শসার পেষ্ট, ১ চা চামচ ডিমের সাদা অংশ, ২ চা চামচ লেবুর রস, ২ চা চামচ পুদিনা পাতার রস, পর্যাপ্ত পরিমাণে আপেলের পেষ্ট দিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। প্যাকটি সারা মুখে লাগান। ২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

৫) টমেটো প্যাক

টমেটোতে রয়েছে বিপুল পরিমাণে আয়রন এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। ফলে ত্বকের গুণমান বজায় রাখতে এবং ত্বক টানটান রাখতে টমেটো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

উপরোক্ত উপায়গুলো অবলম্বন করলে আমাদের ত্বক দ্রুত বুড়িয়ে যাবে না আর বলিরেখা থেকেও মুক্ত থাকবে।

ছবি- সংগৃহীত: সাজগোজ; ইমেজেসবাজার.কম

The post ত্বকের বলিরেখা | কী, কারণ ও দূর করার কার্যকারী ঘরোয়া উপায় জানেন কী? appeared first on Shajgoj.


Viewing all articles
Browse latest Browse all 3010

Trending Articles