Quantcast
Channel: Shajgoj
Viewing all articles
Browse latest Browse all 3010

মৃত সন্তান প্রসবের ৯টি কারণ জানা আছে কি?

$
0
0

মৃত সন্তান প্রসব করা বলতে প্রসবের পূর্বে গর্ভেই ভ্রূণের মৃত্যু হওয়াকে বুঝায়। এতে প্রসব হওয়া সন্তানের মধ্যে প্রাণের কোন চিহ্নই থাকে না। এটি গর্ভস্রাব এবং জীবিত সন্তান জন্ম দেয়া থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। গর্ভস্রাব হচ্ছে গর্ভধারণের প্রথম দিকেই সন্তানহানী হওয়া এবং জীবিত সন্তান জন্ম দেওয়ার পরপরই সন্তান মারা যাওয়া মৃত সন্তান প্রসব করা থেকে একেবারেই আলাদা। মৃত সন্তান জন্ম দেওয়া হচ্ছে গর্ভধারণের  ২০ থেকে  ২৮ সপ্তাহে বা তার পরবর্তীতে ভ্রূণের গর্ভেই মৃত্যু হয়ে যাওয়া। কিন্তু এর কারণ কি? কেন হচ্ছে এই সমস্যা? প্রায়শই এর কারণ অজ্ঞাত থেকে যায়। বিভিন্ন কারণে এই সমস্যা হয়ে থাকে। আজকে আমরা আপনাদের জানাবো মৃত সন্তান প্রসবের ৯টি কারণ।

মৃত সন্তান প্রসবের কারণ

চিকিৎসা বিজ্ঞানে মৃত সন্তান প্রসবের সঠিক কারণ এখনো কারো জানা নেই। কিন্তু তারপরও কিছু কারণ আছে যা রোগীদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে চিকিৎসকরা বের করেছেন। বিভিন্ন কারণেই সন্তান গর্ভে মারা যেতে পারে। মায়ের দুর্বল স্বাস্থ্য, অতিরিক্ত ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি এমন অনেক কারণে সন্তান মায়ের গর্ভেই মৃত্যুবরণ করে থাকে। কিন্তু এই কারণগুলো অজানাই থেকে যায়। যার জন্য পরবর্তীতে আবারো একই ধরণের সমস্যার  সম্মুখীন হতে পারেন। চলুন যেনে নেই কি কি কারণে সন্তান গর্ভেই মৃত্যুবরণ করে।

(১) মায়ের দুর্বল স্বাস্থ্য

মৃত সন্তান জন্ম দেওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে মায়ের দুর্বল স্বাস্থ্য। একজন মায়ের সুস্বাস্থ্যই একটি সুস্থ্য সন্তান জন্মদানের প্রধান চাবিকাঠি। মায়ের স্বাস্থ্য দুর্বল থাকলে সন্তান সঠিক পুষ্টিগুণ পায় না যার ফলে গর্ভেই মৃত্যুবরণ করে।

(২) অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস

মৃত সন্তান প্রসব ঠেকাতে ডায়বেটিস পরীক্ষা - shajgoj.com

মায়ের অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস সন্তান গর্ভে মৃত্যুবরণ করার উল্লেখযোগ্য একটি কারণ। অনেক মা জানেনই না তার ডায়বেটিস আছে। ফলে ডায়বেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকে এবং সন্তান পেটেই মারা যেতে পারে।

 (৩) ভ্রূণ বৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ হলে

ভ্রূণ বৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ হলে সন্তান পেটেই মারা যায়। দুর্বলতার জন্য এবং সঠিক পুষ্টি না পেলে ভ্রূণ বৃদ্ধি পায় না এবং মারা যায়।

(৪) মায়ের উচ্চ রক্তচাপ বা হাই প্রেশার

মৃত সন্তান প্রসব ঠেকাতে উচ্চ রক্তচাপ পরিক্ষা - shajgoj.com

উচ্চ রক্তচাপ বা হাই প্রেশার পেটে সন্তান মারা যাওয়ার আরেকটি অন্যতম কারণ। অতিরিক্ত প্রেশারের ফলেও অনেক মা পর্যাপ্ত মেডিসিন খাচ্ছেন না। আবার কেউ মেডিসিন খেলেও প্রেশার নিয়ন্ত্রণে থাকছে না যার ফলে পেটেই সন্তান মারা যাচ্ছে।

(৫) মায়ের বয়স ৩৫ বছরের বেশি হওয়া

একজন নারীর বয়স ৩৫ বছরের বেশি হলে তার সন্তান ধারণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কমে যায়। তাই মায়ের বয়স ৩৫ বছরের বেশি হলেও অনেক সময় পেটে সন্তান মরে যেতে পারে।

 (৬) গর্ভাবস্থায় নেশাজাত দ্রব্য গ্রহণ করলে

গর্ভাবস্থায় নেশাজাত দ্রব্য যেমন অ্যালকোহল, নিকোটিন অথবা কোন বিরূপ ঔষধ গ্রহণ করলে সন্তানের উপর প্রভাব পড়বে এমনকি সন্তান গর্ভেই মারা যেতে পারে।

 (৭) গর্ভাবস্থায় চিৎ এবং কাত হয়ে ঘুমালে 

 মৃত সন্তান প্রসব ঠেকাতে চিৎ এবং কাত হয়ে না শোয়া - shajgoj.com

গর্ভধারণের ২৮ সপ্তাহ পর মা যদি চিৎ অথবা কাত হয়ে ঘুমায় তাহলে বাচ্চা পেটে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

(৮) থাইরয়েড হলে

মায়ের থাইরয়েড এর সমস্যা থাকলে অনেক সময় সন্তান গর্ভে মারা যায়। থাইরয়েড হরমোন বেড়ে গেলে ভ্রূণের গর্ভে বৃদ্ধিতে বাধা আসে। ফলে ভ্রূণ গর্ভেই মারা যায়।

(৯) শারীরিক আঘাত

গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরের পেটের জায়গায় বা তার আশেপাশে কোন আঘাত লাগলে গর্ভে থাকা সন্তানের উপর প্রভাব পড়ে এবং গর্ভেই সন্তান মারা যেতে পারে।

এছাড়া গর্ভে বাচ্চার নাড়ি ছিড়ে গেলে, মায়ের ব্লাড গ্রুপ পজেটিভ কিন্তু বাবার নেগেটিভ হলে আবার গর্ভে থাকা সন্তানের পজেটিভ হলেও সন্তান অনেক সময় গর্ভেই মারা যেতে পারে।

এখন কিভাবে বুঝবেন গর্ভেই সন্তান মারা গেলো কিনা?

গর্ভেই সন্তানের অবস্থা বুঝতে ডাক্তারি পরীক্ষা - shajgoj.com

বাচ্চা পেটে নড়াচাড়া কমিয়ে দিলেই বুঝে নিতে হবে কোন সমস্যা হচ্ছে। সাধারণত প্রথম দিনেই বুঝতে পারবেন না। লক্ষ্য করবেন আগে বাচ্চা দিনে ১০ বার নড়াচাড়া করলেও হঠাৎ তা কমে ৬ বার, তার পরদিন ৩ বার, পরে একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। তখনই বুঝে নিতে হবে বাচ্চার কিছু হয়েছে। সাধারণত প্রথম দিনে নড়চাড়া একটু কমলেই ডাক্তারের কাছে গিয়ে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা করালে অনেক সময় বাচ্চা বাঁচানো সম্ভব হয়।

সন্তান গর্ভে মারা গেলে মায়ের চিকিৎসা

সন্তান গর্ভে মারা যাওয়ার পরবর্তী চিকিৎসা - shajgoj.com

সন্তান ২ দিনের বেশি গর্ভে নড়াচাড়া বন্ধ করে দিলে ডাক্তার আপনার কিছু পরীক্ষা করবেন। বাচ্চার হার্টবিট শুনে নিশ্চিত হওয়া যায় বাচ্চাটি বেঁচে আছে নাকি নেই। মাতৃগর্ভে বাচ্চা মারা গেলে তৎক্ষণাৎ কোন ক্ষতি হয় না। সাধারণত বাচ্চা মারা যাওয়ার ২ সপ্তাহ পর লেবার পেইন শুরু হয়। আপনি চাইলে ২ সপ্তাহ অপেক্ষা করতে পারেন এবং স্বাভাবিকভাবে ভ্রূণটি বের হয়ে যেতে দিতে পারেন। কিন্তু ২ সপ্তাহ পর লেবার পেইন শুরু না হলে আর অপেক্ষা করা যাবে না। কেননা ২ সপ্তাহের বেশি বাচ্চাটি মায়ের গর্ভে থাকলে তা রক্তে বিভিন্ন ধরণের পরিবর্তন আনতে পারে যা মায়ের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ২ সপ্তাহের মধ্যে প্রসব না হলে কৃত্রিম উপায়ে প্রসব প্রতিষ্ঠা করা হয়।

অনেকে মৃত বাচ্চা গর্ভে নিয়ে এত দিন থাকতে স্বাচ্ছন্দবোধ করে না। সেক্ষেত্রে কৃত্রিম উপায়ে প্রসব প্রতিষ্ঠা করে ভ্রূণ বের করে আনা হয়। মৃত বাচ্চাটি প্রথম সন্তান হলে তা কোনভাবেই সিজারিয়ান পদ্ধতিতে বের করা হয় না। কিন্তু যদি মায়ের এর আগেও সিজার করা হয় এবং এবারের বাচ্চাটি গর্ভেই মারা যায় সেক্ষেত্রে সিজারের মাধ্যমে পেট থেকে মৃত বাচ্চাটি বের করা হয়। এ সময় মায়ের অনেক রক্তক্ষরণ হয় এবং খুব দুর্বল হয়ে পড়ে। সে ক্ষেত্রে আগে থেকে রক্তের ব্যবস্থা করে রাখতে হবে। একবার বাচ্চা গর্ভে মারা গেলে পরবর্তী বাচ্চাটির মারা যাওয়ার ঝুঁকি ২.৫% থাকে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে হবে। ডাক্তার আগের সন্তান মারা যাওয়ার কারণ বের করে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবেন।

একটি সন্তান একটি পরিবারকে পরিপূর্ণ করে। সেক্ষেত্রে মৃত সন্তান কোনভাবেই কাম্য নয়। সচেতনতাই পারে আপনার সন্তান এবং আপনাকে একটি সুন্দর জীবন দিতে। তাই হতে হবে সচেতন। নিজের যত্ন নিন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সব নিয়ম কানুন মেনে চলুন।

 

ছবি- সংগৃহীত: ইমেজেসবাজার.কম

The post মৃত সন্তান প্রসবের ৯টি কারণ জানা আছে কি? appeared first on Shajgoj.


Viewing all articles
Browse latest Browse all 3010

Trending Articles