প্রতিদিনকার মেকআপ হোক বা পার্টি মেকআপ, দিনশেষে মেকআপ না তুললে স্কিনের যে বারোটা বাজবে সেই কথা কিন্তু বারবারই বলেন এক্সপার্ট-রা। তবুও আমাদের অনেকেই মেকআপ-টা সঠিকভাবে রিমুভ করি না। আমি অনেককেই দেখেছি শুধুমাত্র ফেইস ওয়াশ দিয়ে মেকআপ তুলতে। অনেকেতো মেকআপ নিয়েই ঘুমিয়ে পড়েন। অন্যদিকে স্কিনের যে ক্ষতি হচ্ছে তা নিয়ে তো চিন্তা বা ধারণাই নেই তাদের। সারাদিন মেকআপ-এ সুন্দর লাগলেই হলো। দিনশেষে টায়ার্ড হয়ে মেকআপ তোলা নিয়ে এত ঝামেলা করতে মন চায় না। তাই তো? দাঁড়ান, তবে এই আর্টিকেল-টি আপনার জন্যই। আজকে আমি জানাবো, সঠিকভাবে মেকআপ না রিমুভ করলে কোন ৯টি স্কিন প্রবলেম হতে পারে। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে, জেনে নেই ৯টি স্কিন প্রবলেম নিয়ে বিস্তারিত।
সঠিকভাবে মেকআপ রিমুভ না করলে যে ৯টি স্কিন প্রবলেম হতে পারে
১. পিম্পল এবং ব্রেকআউট
সারাদিন মুখে মেকআপ লাগিয়ে ঘুরে বেড়ালেন, রাতে মেকআপ রিমুভ না করেই ঘুমিয়ে গেলেন। আর সকালে উঠে দেখছেন মুখভর্তি পিম্পল। কী? মিলে যাচ্ছে? যাওয়ারই কথা। সঠিকভাবে মেকআপ না তুললে পিম্পল এবং ব্রেকআউট হওয়াটাই স্বাভাবিক। সারাদিনের ধুলো, ময়লা, ঘাম, মেকআপ-ই এর জন্য দায়ী।
২. পোর ক্লগিং
সাইন্টিফিক-ভাবে এটা প্রমানিত যে, মেকআপ না রিমুভ করে ঘুমাতে গেলে তা পোর বন্ধ করে দেয়। যার ফলে দেখা দেয় স্কিন প্রবলেমস। তাই মেকআপ তুলে ঘুমাতে যাওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
৩. স্কিন ড্রাইং
মেকআপ করার ফলে এমনিতেই আমাদের স্কিন ড্রাই হয়ে যায়। কারণ, সারাদিন ধরে স্কিনে মেকআপ থাকার ফলে এটা স্কিন সেলস থেকে সমস্ত ময়েশ্চার এবং হাইড্রেশন শুষে নেয়। তবে মেকআপ যদি সারারাত ধরে রাখা হয় এবং এই প্রসেস প্রায়শই করা হলে ধীরে ধীরে স্কিন ড্রাই হয়ে যেতে থাকে।
৪. প্রিম্যাচিওর এজিং এবং রিংকেলস
কম বয়সে স্কিন বুড়িয়ে যাওয়া এবং রিংকেল পড়ে যাওয়ার একটা অন্যতম কারণ হচ্ছে মেকআপ ঠিকমতো না তোলা। স্কিনে রিংকেল পড়ার মত সময় আসে নি, তাও স্কিনে যদি রিংকেল দেখা যায় তখন কেমন লাগবে? আয়নার সামনে কম বয়সেই নিজের বুড়িয়ে যাওয়া স্কিনটা দেখতে ভালো লাগবে? তখন অ্যান্টি-এজিং ক্রিমের পেছনে গাদা গাদা টাকাও ঢালতে হবে। তার থেকে এটা ভালো যে কিছু মিনিট ব্যয় করে মেকআপ-টা সঠিকভাবে রিমুভ করা।
৫. স্কিনে প্রদাহ
আমরা সবাই-ই জানি, মেকআপ প্রোডাক্টগুলো বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি হয়। এই কেমিক্যাল যুক্ত প্রোডাক্টগুলো লং টাইমের জন্য স্কিনে রাখলে স্কিন ইরিটেশন, ব্লাকহেডস, হোয়াইটহেডস ইত্যাদি হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু না। আমার নিজের কথাই বলি, আমি ৬-৭ বছর ধরে মেকআপ ইউজ করলেও আমার আজ পর্যন্ত একদিনও সাহস হয় নি এইসব কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্টস নিয়ে ঘুমাতে যাওয়ার।
৬. আইব্রো এবং আইল্যাশ পড়ে যাওয়া
মাশকারা, আইল্যাশ গ্লু, আইব্রো পমেড, আইব্রো পেনসিল ইত্যাদি চোখটাকে সুন্দর করে তুললেও এগুলো লং টাইম রাখার ফলে আইল্যাশ এবং আইব্রো হেয়ার পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
৭. চোখে ইরিটেশন
আইলাইনার, আইশ্যাডো, কাজল, মাশকারা, গ্লিটার ইত্যাদি রিমুভ না করার ফলে চোখে ইরিটেশন, চোখ ফুলে যাওয়া, চোখ লাল হয়ে যাওয়া এবং চোখ দিয়ে পানি পড়তে পারে। তো, শুধু শুধু কেন নিজের মূল্যবান সম্পদ চোখের এত ক্ষতি করবেন। এর থেকে চোখের মেকআপ সঠিকভাবে রিমুভ করে ফেলা ভালো না?
৮. স্কিন ইনফেকশন
সারারাত স্কিনে মেকআপ রাখারা ফলে বা মেকআপ সঠিকভাবে রিমুভ না করার ফলে স্কিন ইনফেকশন হতে পারে। হয়ত ডিরেক্টলি স্কিনে ইনফেকশন হবে না। তবে ছোট ছোট বাম্প, পিম্পল এগুলো স্কিন ইনফেকশন-এর লক্ষণ বলেই ধরা যেতে পারে। ধীরে ধীরে যা বাড়তে পারে।
৯. ড্রাই লিপস
লিকুইড লিপস্টিক-এর ব্যবহারতো বর্তমানে প্রচুর। যত ভালো ব্রান্ডের লিকুইড লিপস্টিকই হোক না কেন, এগুলো লং টাইম রাখলে ঠোঁটে ড্রাই ফিল হবেই। আর সারারাত রাখলে সকালে উপহার মিলবে রুক্ষ শুষ্ক ঠোঁটের।
এই তো জেনে নিলেন, ৯টি স্কিন প্রবলেম সম্পর্কে, যা সঠিকভাবে মেকআপ রিমুভ না করার ফলে হতে পারে।
আপনি ফ্ললেস মেকআপ করার জন্য যেমন এফোর্ড দেন, মেকআপ রিমুভ করতে কিন্তু তার থেকে অনেক কম সময় লাগে। তাই যতই টায়ার্ড হোন না কেন, এই ৯টি স্কিন প্রবলেম এড়াতে মেকআপ রিমুভ না করে প্লিজ ঘুমোতে যাবেন না। আর শুধুমাত্র ফেইস ওয়াশ দিয়ে মেকআপ রিমুভ করা বন্ধ করুন। ব্যবহার করুন, ভালোমানের মাইসেলার ওয়াটার বা ক্লিনজিং বাম।এরপর ওয়েট ওয়াইপস দিয়ে মেকআপ রিমুভ করে নিয়ে এরপরে ফেইস ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে টোনার ও ময়েশ্চারাইজার লাগাবেন।
আর যদি তা না করতে চান, তবে এ ৯টি স্কিন প্রবলেম মেনে নিতেই হবে।
ভালো থাকুন। সুস্থ ও সুন্দর থাকুন।
ছবি- সংগৃহীত: সাজগোজ; ইমেজেসবাজার.কম
The post ৯টি স্কিন প্রবলেম হতে পারে সঠিকভাবে মেকআপ রিমুভ না করলে appeared first on Shajgoj.