ক্যাস্টর অয়েল মূলত ক্যাস্টর বিন থেকে তৈরি এক ধরনের ভেজিটেবল প্রেসড অয়েল। এই তেলে আছে নানান উপকারি উপাদান। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে ৮৫-৯৫% রিসিনোলিক (Ricinoleic acid), ২-৫% অলিক এসিড (Oleic acid), ১-০.৫% লিনোলিক (Linoleic acid), ০.৫-১% স্টিয়্যারিক এসিড (Stearic acid), ০.৫-১% পালমিটিক এসিড (Palmitic acid)। আসল ক্যাস্টর অয়েল এক ধরনের খুব হালকা হলদে রঙের বেশ ভারি তেল, যার বিশেষ স্বাদ এবং গন্ধ রয়েছে।
তবে বাজারে আমরা যে ক্যাস্টর অয়েল পেয়ে থাকি সেগুলো অনেকটা রিফাইন করা হয়ে থাকে। তবে খুঁজলে আপনি ১০০% ভার্জিন ক্যাস্টর অয়েল-ও পাবেন, তবে দাম পরবে একটু বেশি। তবে এর গুণাগুণ বিচার করলে দামটা আপনি বিবেচনা করতেও পারেন।
আর স্কিন ক্যাফে এর ১০০% ভার্জিন ক্যাস্টর অয়েল পাবেন মাত্র ৫৫০/- টাকায় যমুনা ফিউচার পার্ক ও সীমান্ত স্কয়ার-এ অবস্থিত শপ.সাজগোজ.কম-এর ফিজিক্যাল শপ দুটোতে এবং তাদের অনলাইনে।
ক্যাস্টর অয়েল-এর উপকারিতা
১) আথ্রাইটিস-এর ট্রিটমেন্ট এটি ভালো উপকার দেয়।
২) চুলের গোঁড়া মজবুত করে এবং চুল ঘন করে।
৩) একনে ট্রিটমেন্ট-এও এর ভালো উপকার পাওয়া যাওয়া যায়।
৪) স্কিনকে গভীর থেকে ময়েশ্চারাইজ করে এবং ডিপ ক্লিনজিং-এও এর ব্যবহার রয়েছে।
৫) ইমিউনিটি ফাংশন ভালো ইম্প্রুভ করে। ত্বকের ফাইন লাইন এবং রিঙ্কল দূর করে।
৬) কোন কারণে বা ব্যথা পেলে ফুলে গেলে এর মালিশ করতে পারেন। এছাড়াও লিম্ফাটিক সিস্টেম সাপোর্ট করে।
৭) ছোট আঘাত সারাতে বা ত্বকে ছড়ে গেলে এর মালিশ করতে পারেন, প্রদাহ কমাতে সাহায্য করবে।
৮) পিরিয়ড-এর ব্যথা কমায়, এছাড়া এটি পরিমাণমত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে আরাম পাওয়া যায়।
ত্বক ও চুলের যত্নে ক্যাস্টর অয়েল
উপকারিতা তো অনেক জানলেন, এবার এটি কিভাবে ব্যবহার করলে ত্বক ও চুলের যত্নে সবচেয়ে ভালো উপকার পাবেন সেটি নিয়ে আলোচনা হবে।
১. সুন্দর ঠোঁটের যত্নে
সফট, স্মুদ সুন্দর ঠোঁট আমরা সকলেই চাই। ক্যাস্টর অয়েল ঠোঁটকে খুব ভালোভাবে হাইড্রেট করে বলে, আপনি পাবেন আকাঙ্ক্ষিত সেই নরম, প্লাম্পি ঠোঁট। খুব সহজ কিন্তু, রাতে ঘুমুবার আগে ঠোঁটটাকে একটু স্ক্রাব করে নিয়ে, এই অয়েল লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন, কদিন বাদে পেয়ে যাবেন একদম নরম তুলতুলে ঠোঁট।
২. আইব্রো
অনেকেরই ভ্রূ খুব পাতলা, তারা সব সময়ই ঝামেলায় পরেন সাজগোজের সময় এই ভ্রূটা ঠিকঠাকমত আঁকা নিয়ে। কিন্তু আপনার ঘরে যদি থাকে এই অয়েল, তাহলে এই সমস্যা থেকে বাঁচা খুব সহজ। রোজ রাতে দু’ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল ভ্রূতে লাগিয়ে নেবেন। ফল পেতে কয়েক মাস সময় লাগবে ঠিকই, তবে বিফল হবে না।
৩. ডিপ ক্লিনজিং ও ময়েশ্চারাইজিং
মুখটাকে ধুয়ে নিন আগে। এর পরে কয়েক ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল এর সাথে মেশান কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল। এই মিশ্রণটি পুরো মুখে লাগিয়ে হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন কয়েক মিনিট। এরপর একটি পাতলা ছোট তোয়ালে কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে পানিটা চিপে নিয়ে মুখের ওপর রেখে দিন এক মিনিট। এরপরে ভালোভাবে ঐ তোয়ালে দিয়েই মুখটা মুছে নিন। একই প্রসেস আরেকবার করুন, তবে দ্বিতীয় বারে আরেকটি তোয়ালে নেবেন। এরপরে কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিয়ে, সঙ্গে সঙ্গেই মুখে বরফ ঘসে টোনিং করে নিন। নিয়মিত করলে ফল পাবেন দ্রুতই।
৪. চুল পড়া ও ভেঙে যাওয়া বন্ধ করতে
আধা কাপ বা চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী একেবারে চুলের গোঁড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালো করে তেল লাগিয়ে, ভালো করে আঙুলের সাহায্যে ম্যাসাজ করুন। যেহেতু ভার্জিন ক্যাস্টর অয়েল অনেক ঘন হয়ে থাকে, তাই এটি ভালো করে ম্যাসাজ না করলে এটার ভালো ফল পাবেন না।
৫. নতুন চুল গজাতে
সমপরিমাণ ক্যাস্টর অয়েল, অলিভ অয়েল, তিলের তেল মিশিয়ে একটু গরম করে মাথার স্ক্যাল্পে লাগিয়ে রাখুন সারারাত। তারপরে শ্যাম্পু করে ফেলুন।
এছাড়াও এই তেল নিয়মিত ব্যবহারে চুল পড়া বন্ধ হবে, নতুন চুল গজাবে, চুল ঘন হবে, চুলের রঙ ডার্ক হবে, আগা ফেটে যাওয়া কমবে, ভালো কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে, হেয়ার ড্যামেজ কমাবে, চুলের উজ্জলতা বাড়াবে।
তাহলে জানলেন তো এক ক্যাস্টর অয়েল এই কত উপকার। তবে বাজারের রিফাইন করা কম দামি ক্যাস্টর অয়েল-এ আপনি কতটা উপকার পাবেন সেই নিশ্চয়তা কিন্তু দেয়া যাচ্ছে না। যেহেতু জিনিসটা উপকারী অনেক কাজেই ব্যবহার করতে পারবেন, তাই আমি বলবো, একটু টাকা ইনভেস্ট করতেই পারেন এতে। তাহলে এবার সিদ্ধান্ত আপনার।
ভালো থাকবেন, সুন্দর থাকবেন।
ছবি- সংগৃহীত: সাজগোজ; ইমেজেসবাজার.কম
The post ক্যাস্টর অয়েল | সুন্দর ত্বক ও ঝলমলে চুলের পেছনের রহস্য! appeared first on Shajgoj.