ঘুরাঘুরি নিয়ে আবার এলাম। এর আগে ঢাকার আশেপাশে মনোরম কিছু জায়গা নিয়ে আলোচনা করেছিলাম যা অল্প সময়ে ঘুরে আসার মতো। আর এই গরমে দূরে কোথাও না গিয়ে আশেপাশে মন ভোলানো জায়গাগুলো ঘুরে আসাই ভালো।
প্রচন্ড গরম এখন, এসময় বেড়াতে যাওয়ার কথা ভাবা যায় না যেন।রোদ আর তপ্ত বাতাসে দূরের পথ পাড়ি দেয়া বেশ কষ্টসাধ্য। কিন্তু তারপরও তো ঘুরতে যেতে মন চায়, অন্তত একটা দিন সব কাজ ভুলে থাকতে মন চায়! তাই একদিন সময় করে চলে যান ঢাকার কাছেই, তাজমহলে। যা নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও পেরিয়ে অবস্থিত।
বাংলার তাজমহল
ভারতের আগ্রার তাজমহলের কোথা তো সবাই জানেন। সেটার অনুকরণেই নারায়ণগঞ্জে শিল্পপতি চলচ্চিত্রকার আহসান উল্লাহ মনি নির্মাণ করেছেন বাংলার এই তাজমহল। ঢাকা থেকে ১০ মাইল পূর্বে সোনারগাঁয়ের জামপুর ইউনিয়নের পেরাব গ্রামে অবস্থিত এটি। এটি তৈরি করতে প্রায় ৫ বছর সময় লাগে এবং এটি ব্যক্তি-মালিকানাধীন।
এটি প্রায় ১৮ বিঘা জমির উপর অবস্থিত। আশেপাশে আরও ৫২ বিঘা জমি আছে পর্যটনের জন্য। এখানে দেখা যাবে চারপাশের সুন্দর আর মনোরম পরিবেশ , হাজার হাজার নাম না জানা পাখির কিচিরমিচির করা বিকেল আপনার মন ভালো করে দিবে।
তাজমহলের নির্মাণ কাজের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে বিদেশী উপকরণ যেমন ১৭২ টি কৃত্রিম ডায়মন্ড , ব্যবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি । নির্মাণ কাজে ৬ জন টেকনিশিয়ানদের নিয়োগ দেয়া হয়। ভারতের তাজমহলকে অনুসরণ করা হয়েছে বলে নির্মাতাকে ভারতে যেতে হয়েছে অনেকবার।
২০০৮ সালে এর উদ্বোধন হয়। পর্যটকদের জন্য এখানে প্রবেশের আগে চমৎকার ১০ টি ঝর্ণা রয়েছে যা মুগ্ধ হয়ে দেখার মতোই।
তাজমহলের আশেপাশে ফুলের বাগান আর নিরিবিলিতে বসার স্থান রয়েছে অনেক। তাজমহলটির ভেতরের মূল মহল দারুণ সব পাথর দিয়ে মোড়ানো আর টাইলস করা।মহলের ভেতরে আহসানউল্লাহ্ মনি ও তার স্ত্রী রাজিয়া দু’জনের কবরের স্থান সংরক্ষিত আছে।
“বাংলার তাজমহল” আগ্রার তাজমহলের মতোই চার কোণে চারটি বড় মিনার রয়েছে।
তাজমহলের ভেতরে আরও রয়েছে “রাজমনি ফিল্ম সিটি স্টুডিও”।তাজমহলের বাইরে রয়েছে “রাজমনি ফিল্ম সিটি রেস্তোরাঁ”, আরও বিভিন্ন খাবারের দোকান, হোটেল, আবাসিক ভবন, জামদানি শাড়ির দোকান, হস্তশিল্প সামগ্রী, মাটির গহনাসহ আরও অন্যান্য পণ্য সামগ্রীর দোকান।
এর আশেপাশে রয়েছে বিভিন্ন পিকনিক স্পট, চাইলে সেসব জায়গাও ঘুরে আসতে পারেন।
কীভাবে যাবেন?
বাংলার তাজমহল ঢাকা থেকে ২৫ কি. মি. দূরত্বে অবস্থিত । ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে ভৈরব , নরসিংদী , কিশোরগঞ্জ-গামী যেকোনো গাড়িতে চড়ে বরপা বাসস্ট্যান্ডে নামতে হয় , সেক্ষেত্রে ভাড়া হবে ২৫ টাকা । এখান থেকে সিএনজি স্কুটারে জনপ্রতি ১০ টাকা ভাড়ায় পৌঁছে যেতে পারেন তাজমহলে ।
অন্যভাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে কুমিল্লা , দাউদকান্দি অথবা সোনারগাঁ-গামী যেকোনো গাড়িতে চড়ে মদনপুর বাসস্ট্যান্ডে নামতে হয় । সেক্ষেত্রে ভাড়া লাগে ২০ টাকা । সেখান থেকে সিএনজি বা স্কুটারে জনপ্রতি ২৫ থেকে ৩০ টাকা ভাড়ায় যাওয়া যায় তাজমহলে ।
বাংলার তাজমহলটি মাত্র ৫০ টাকার টিকিট বা প্রবেশমূল্যের বিনিময়ে দেখেন দর্শনার্থীরা ।
গাড়ি পার্কিং ২০ টাকা ।
সময়সূচী: প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা ।
ছবি – ইউটিউব ডট কম, অফরোডবাংলাদেশ ডট কম
লিখেছেন – সোহানা মোরশেদ